গাজায় যুদ্ধবিরতি বন্দিমুক্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নেতানিয়াহুর
- By Jamini Roy --
- 16 January, 2025
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার দীর্ঘ সংঘাত অবশেষে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে নিরসন পেতে যাচ্ছে। এই চুক্তির জন্য নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
দখলদার ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান ১৫ মাসের সংঘর্ষে প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের পর, অবশেষে একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল–থানি এই চুক্তির কথা জানান।
চুক্তি অনুযায়ী, ১৯ জানুয়ারি রবিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। চুক্তির আওতায় তিনটি ধাপ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ইসরাইল ও হামাস উভয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
প্রথম ধাপ: বন্দি মুক্তি ও ইসরাইলি বাহিনীর সরে যাওয়া
প্রথম ধাপে হামাসের হাতে বন্দি থাকা ৩৩ জন ইসরাইলি নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হবে। এদের মধ্যে রয়েছে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ। একই সঙ্গে ইসরাইল গাজার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৭০০ মিটার দূরে তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে।
এছাড়া, গাজার উত্তর অঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেবে এবং প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ সরবরাহে ইসরাইলের অনুমোদন থাকবে।
দ্বিতীয় ধাপ: স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি
প্রথম ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন হলে দ্বিতীয় ধাপে ইসরাইলি কারাগারে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মুক্তির বিনিময়ে হামাস অবশিষ্ট জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে। এই ধাপে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। একই সঙ্গে গাজার পুরো এলাকা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তৃতীয় ধাপ: মৃতদেহ প্রত্যাবর্তন ও গাজা পুনর্গঠন
চুক্তির তৃতীয় ধাপে হামাস এবং ইসরাইল উভয়ের নিহতদের মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এই ধাপে গাজা পুনর্গঠনের কাজও শুরু হবে, যা মিশর, কাতার এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি কয়েক ডজন জিম্মি এবং তাদের পরিবারের দুর্ভোগের অবসান ঘটানোর জন্য ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সহায়তার জন্যও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
নেতানিয়াহু শিগগিরই ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই চুক্তি ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে, চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এর সফলতা নির্ভর করবে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার উপর।